শনিবার ১৮ মে ২০২৪
Online Edition

দীর্ঘ আইনী লড়াইয়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হলো দুর্নীতি করেননি শাহজাহান চৌধুরী 

সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা : ১/১১ সরকারের সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের করা মামলায় বিশেষ জজ আদালতে দেয়া দশ বছরের সাজার বিরুদ্ধে করা আপীল চূড়ান্ত নিস্পত্তির পর দুর্নীতির অর্থে কেনা অভিযোগে আটককৃত সেই বিলাস বহুল রেঞ্জ রোভার গাড়িটিও ফেরত পেয়েছেন জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী। সম্প্রতি তিনি (শাহজাহান চৌধুরী) স্ব-শরিরে দুদক কার্যালয়ে হাজির হয়ে সেই গাড়িটি বুঝে নিয়েছেন। উচ্চ আদালতে চূড়ান্ত শুনানী শেষে বিশেষ জজ আদালতের দেয়া সাজাকে অবৈধ ঘোষনার পাশপাশি আটককৃত গাড়িটিও ফেরত দেয়ার জন্য নির্দেশ প্রদানের প্রেক্ষিতে শাহজাহান চৌধুরীকে গাড়িটি ফেরত দেয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছেন দুদক সূত্র। এর ফলে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে চূড়ান্ত ভাবেই মুক্ত হলেন সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের সাবেক সাংসদ।

 সূত্রে প্রকাশ, ২০০৭ সালে মঈনুদ্দিন ফখরুদ্দিন ক্ষমতায় আসার পর ২০০৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মাত্র ৭২ ঘন্টা সময় দিয়ে শাহজাহান চৌধুরীসহ দেশের ৫০ জন ব্যাক্তির সম্পদের হিসাব তলব করলে সর্ব প্রথম (দুদক) কার্যলয়ে হাজির হয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি ২ লাখ ৪১ হাজার টাকার স্থাবর অস্থাবর সম্পদের হিসাব জমা দেন শাহজাহান চৌধুরী। তার প্রদত্ত হিসাবে গরমিল আছে মর্মে অভিযোগ এনে ঐ বছরের ১ জুলাই নগরীর বন্দর থানায় মামলা দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ। এ মামলায় চট্টগ্রামস্থ অতিক্তি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে শাহজাহান চৌধুরী আত্মসমর্পন করলে আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অপরদিকে এ মামলাটি ঢাকার সংসদ ভবনে স্থাপিত বিশেষ আদালতে হস্তান্তর করা হয়। ২০০৮ সালের ১৩ এপ্রিল বিশেষ জজ আদালতের বিচারক অমর কুমার রায় এ মামলার প্রদত্ত রায়ে শাহজাহান চৌধুরীকে ১০ বছর কারাদন্ড দেন। পাশপাশি সংসদ সদস্য কোটায় শুল্কমুক্ত ভাবে আনা রেঞ্জ রোভার গাড়িটিও দুদক জব্দ করে রাখে। এর পর এ মামলায় শাহজাহান চৌধুরী হাই কোর্টে জামিনের আবেদন জানালে র্দীঘ শুনানীর পর ঐ বছরের ২০ নভেম্বর আদালত তিন মাসের জামিন দেন শাহজাহান চৌধুরীকে। পরে রায়ের বিরুদ্ধে করা আপীলে শাহজাহান চৌধুরীকে খালাস প্রদান করলেও দুদক পরে খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করেন। পরে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত আপীল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ শুনানী শেষে শাহজাহান চৌধুরীকে খালাস দিয়ে তার জব্দকৃত গাড়িটিও ফেরত দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে গত ৫ ডিসেম্বর দুদক কার্যালয়ে হাজির হয়ে দুদক কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তিনি (শাহজাহান চৌধুরী) গাড়িটি বুঝে নেন।

 এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজাহান চৌধুরীর আইনজীবি এডভোকেট গোলাম ফারুক বলেন, উচ্চ আদালত থেকে নির্দোষ প্রমান হয়ে শাহজাহান চৌধুরী গাড়িটি ফেরত পেলেও তা অনেকটা অকেজো হয়ে গেছে। দীর্ঘ দিন অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে থাকায় গাড়িটির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। এখন গাড়িটি মেরামত করা যায় কিনা তা নিয়ে কাজ চলছে। গাড়িটি ফেরত পাওয়া বড় কথা নয় জামায়াত ইসলামী নেতা কর্মীরা কোন ধরনের দুর্নীতির সাথে জড়িত নয় সেটিই আজ দীর্ঘ আইনী লড়াইয়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন শাহজাহান চৌধুরী। সেটিই বড় অর্জণ বলে মনে করেন এ আইনজীবি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ